একেই বোধহয় বলে, মরতে মরতে বেঁচে ওঠা। নাহলে যারা বিরতির আগে ২-০ গোলে এগিয়ে আছে। ৪৮ মিনিটের মাথায় ৩-০ গোলে এগিয়ে থেকে নিশ্চিত জয়ের দোরগড়ায় পৌছে গিয়েছে রিয়াল মাদ্রিদ। অথচ প্রতিপক্ষ ম্যাচ ঘুরিয়ে দিল মাত্র ৯ মিনিটের মধ্যে। ৬৯ ও ৭৬ মিনিটে পরপর দুটো গোল করে এমন চাপ সৃষ্টি করল সেল্টা ভিগো, রিয়াল রক্ষণে তখন নাভিশ্বাস উঠে গিয়েছে। ছেড়ে দে মা কেঁদে বঁাচি অবস্থা। গোল হয়, গোল হয়, এমন জায়গা দঁাড়িয়ে গিয়েছে রিয়াল। অথচ ড্র কিংবা হেরে গেলে টিম টিম করে জ্বলা শেষ সলতেও রিয়ালের নিভে যাবে। শেষ সলতে? চলতি মরশুমে সব ট্রফি হাতছাড়া হয়ে গিয়েছে। বাকি পড়ে আছে লা লিগা। সেখানে আবার চিরশত্রু বার্সেলোনা এগিয়ে আছে ৭ পয়েন্টে। প্রতিটি ম্যাচ তাই রিয়ালের কাছে ফাইনাল। হারলেই মোটামুটি ট্রফি হারা হয়ে থেকে যাবে রিয়াল। সেই ম্যাচ কোনওমতে জিতে পয়েন্টের ব্যবধান চিরশত্রু দলের থেকে চারে নামিয়ে আনলেন এমবাপেরা।
তাই তো খেলার শেষে রিয়াল কোচ কার্লো আনচেলেত্তি বুঝিয়ে দিলেন, তঁাদের কাছে ম্যাচটা কতটা টাফ হয়ে উঠেছিল। “ছয়জন নিয়মিত খেলা ডিফেন্ডারকে এই ম্যাচে পাইনি। যার ফল তো ভুগতেই হবে। তবে এভাবেই আমাদের চলতি মরশুমে খেলে যেতে হয়েছে। মানছি, আমাদের আরও ভাল খেলা উচিত ছিল। সেই পারফরম্যান্স দল দেখাতে পারেনি।” আগামী রবিবার রিয়াল-বার্সেলোনা মুখোমুখি হবে। সেই ম্যাচ যে লা লিগার ভাগ্য নির্ধারণ করে দেবে তা একপ্রকার নিশ্চিত। যদিও আনচেলেত্তি তা মনে করছেন না। তঁার মতে, অনেকটা এগিয়ে দেবে বিজয়ী দলকে। তবে পুরোপুরি লা লিগা জিতে যাবে তার কোনও মানে নেই। প্রকারন্তরে বার্সেলোনাকে চ্যালেঞ্জ ছঁুড়ে দিয়ে আনচেলেত্তি বলেন, “রবিবারের ম্যাচটা অবশ্যই আমাদের সামনে ট্রফি জয়ের মস্তবড় সুযোগ এনে দেবে। তারজন্য আমাদের প্রস্তুতিতে কোনও খামতি রাখলে চলবে না। আমাদের কঠিন লড়াইয়ের জন্য সেইভাবে অনুশীলনে ঝঁাপাতে হবে। এও ঠিক, রবিবার জিতলেই যে আমরা লা লিগা পেয়ে যাব তাতো নয়। তবু আমরা বার্সেলোনার থেকে এক পয়েন্টে পিছিয়ে থাকব। তবে একটা ব্যাপার নিশ্চিত হবে, যেই দল জিতবে তারা অনেকটা লা লিগা পাওয়ার দৌড়ে এগিয়ে থাকবে।”
লা লিগায় এখন বার্সেলোনা ও রিয়াল মাদ্রিদের চারটে করে ম্যাচ বাকি। রবিবারের ম্যাচটা দুটি দলের কাছে খুব গুরুত্বপূর্ন। যদি রিয়াল জিতে যায় তাহলে চাপে পড়ে যাবে বার্সেলোনা। তখন বাকি তিনটে ম্যাচের মধ্যে কোনও না কোন ম্যাচে হেঁাচট খেতে পারে হ্যান্সি ফ্লিকের দল। রিয়াল তখন খোলা মনে খেলে শিরোপার দৌড়ে অনেকটা এগিয়ে যাবে। আবার যদি উল্টোটা ঘটে তাহলে ধরেই নিতে হবে, রিয়ালের ট্রফি হাতছাড়া হয়ে গিয়েছে। তবে ঘরের মাঠে সেল্টা ভিগোর বিরুদ্ধে যেভাবে চাপে পড়ে গিয়েছিলেন এমবাপেরা তাতে আশার আলো খুব একটা দেখছেন না সমর্থকরা। তার উপর ৩৩ ও ৩৯ মিনিটে পরপর দুটো গোল দিয়ে যথাক্রমে রিয়ালকে এগিয়ে দিয়েছিলেন আর্দা গুলের ও এমবাপে। বিরতির পর খেলা শুরু হওয়ার তিন মিনিটের মধ্যে ফের গোল দিয়ে রিয়ালকে জয়ের ঠিকানায় একপ্রকার পৌছে দিয়েছিলেন এমবাপে। অথচ সেল্টা ভিগোর জাভি রড্রিগুয়েজ ও উইলিয়ট সুয়েদবার্গ গোল করে প্রচন্ড চাপে ফেলে দেন রিয়ালকে। সেই সময় যদি ৩২ বছরের বেলজিয়ান গোলকিপার কুর্তোয়া একা কুম্ভ হয়ে না দঁাড়াতেন তাহলে কপালে অশেষ দুঃখ ছিল রিয়ালের। শেষ অবধি রিয়াল হাসি মুখে মাঠ ছাড়তে পেরেছে, স্রেফ কুর্তোয়ার জন্যই। রবিবার যে সেই বেলজিয়ান গোলকিপার বঁাচাবে তার কী মানে আছে।

সিনার শীর্ষে, দ্বিতীয় স্থানে আলকারাজ
গতবার জকোভিচকে ফাইনালে হারিয়ে ট্রফি তুলে ধরেছেন উইম্বলডন বিজয়ী আলকারাজ।