ঘরোয়া ক্রিকেটে আগামি মরশুমে বৈভব সূর্যবংশীকে বাংলার হয়ে খেলতে দেখা যেতে পারে।
হ্যাঁ, এখন নিশ্চিত করে কিছু বলা যাচ্ছে না। তাই অনেক যদি বা কিন্তু যোগ করতে হচ্ছে। পরিবারের ইচ্ছা ও নিয়মের জাঁতাকলে না আটকালে বাংলায় খেলতে পারেন সূর্যবংশী।
পরিবারের কথা শুরুতে একটাই কারনে উঠছে। বৈভবের বাবা সঞ্জীব সূর্যবংশী এখনই বিহারের বাইরে ছেলেকে রাখতে চান না। তাঁর ইচ্ছা বৈভব বিহারের হয়েই ঘরোয়া ক্রিকেট খেলুক। সেখানে খেলেই এতদূর আসতে পেরেছে। তা হলে হঠাৎ করে কেন ঘরের বাইরে ছেলেকে পাঠাতে যাবেন। এতে বিহার ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের কর্তারা রেগে যেতে পারেন। তাঁরা বৈভবের ক্লিয়ারেন্স আটকে দিতে পারেন। তারপর টানা ঘরের বাইরে থাকলে মানসিক দিক থেকে ধাক্কা খেতেও পারে বৈভব। তাই এখনই এ নিয়ে সঞ্জীব কিছু ভাবছেন না।
তবে সঞ্জীব না ভাবলেও বৈভবের কাকা রাজীব চান অন্য রাজ্যের হয়ে ঘরোয়া ক্রিকেট খেলে নিজেকে আরও ভাল করে তৈরি করে নিক বৈভব। এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলছেন, এখনই এ নিয়ে অনেকে বৈভবের বাবার সঙ্গে কথা বলেছেন। তারা বলেছেন, কলকাতা, দিল্লি বা মুম্বইয়ে পাঠিয়ে দেওয়া হোক বৈভবকে। সেখানে থেকে নিজেকে আরও পালিশ করে নিতে পারবে বৈভব। কিন্তু র বাবা-মা না চাইলে কী করে হবে।
এট ঘটনা যে ছেলের জন্য সঞ্জীবকে আত্মত্যাগ করতে হবে। ছেলেকে নিয়ে অনেক স্বপ্ন দেখেছেন। তার কিছুটা বাস্তবে দেখতে । কিন্তু এখনও অনেক পথ হাঁটা বাকি। সেটা করতে গেলে বিহারে থাকলে হবে না। যে রাজ্যগুলির কথা সকলে বলেছেন, সেখানে খেললে ঘরোয়া ক্রিকেটে উপরের দিকে খেলা সম্ভব হবে বৈভবের। বিহার আর কতদূর যাবে। তাদের ঘরে সেই ক্রিকেটর কোথায়! যেখানে খেলে নিজেকে তৈরি করে নিতে পারবে। রনজি ট্রফির নকআউট স্টেজে ভল বোলারদের পাওয়া যায়। তাদের বিরুদ্ধে খেলে বাড়তি নজরে পড়া যাবে। নির্বাচকরা সেই সব ম্যাচে মাঠে হাজির থেকে খেলা দেখেন। কিন্তু বিহারের খেলা দেখতে কজন নির্বাচক মাঠে থাকবেন। তাই বৈভবের ভবিষ্যতের কথা ভেবে পরিবারের মত বদল দরকার। এই তো আইপিএল অকশন থেকে রাজস্থান রয়্যালস তাঁকে কোটি টাকায় দলে নেওয়ার পর বৈভব টানা তিন মাস নাগপুরে ছিলেন। সেখানে রাজস্থান রয়্যালসের হাই পারফরম্যান্স সেন্টারে থেকে প্র্যাকটিস করেছেন। তার ফল এবারে আইপিএলে পেয়েছেন বৈভব। তা হলে ছেলের উন্নতির জন্য কেন সিদ্ধান্ত বদলে রাজি হবেন না বাবা-মা। যে সব রাজ্যের কথা বলা হচ্ছে, তাদের কেউ কি বৈভবের বাবার সঙ্গে কথা বলেচেন! না. রাজীব তা বলতে পারেননি। শুধু জানিয়েছেন, অনেকেই বলছেন ভিনরাজ্যে বৈভবকে পাঠাতে।
শোনা যাচ্ছে, বাংলা চাইছে ঘরোয়া ক্রিকেটে আসন্ন মরশুমে বৈভবকে পেতে। রবিবার রাতে সিএবির প্রাক্তন সভাপতি সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈভবের কথা হয়েছে। সেখানে নাকি এসব নিয়ে কথা হয়নি। ছেলের খেলা দেখতে বাবা- মা ইডেনে এসেছিলেন। তাঁদের সঙ্গে বাংলার ক্রিকেট কর্তারা সম্ভবত কথা হয়নি। এখন অবশ্য কথা বলে লাভও নেই। কারন, ভিনরাজ্যের ক্রিকেটারদের বাংলার রনজি টিমে খেলার ব্যাপারে সিএবি কর্তারা নতুন নিয়ম এনেছেন। সেই নিয়মের জাঁতাকলে আটকে যেতে পারেন বৈভব। তাই আগে থেকে তাঁদের সঙ্গে কথা বলে লাভ নেই।
নিয়মটি কি! ভিনরাজ্যের ক্রিকেটাররা আগে কলকাতায় এসে একবছর ক্লাব ক্রিকেট ভাল পারফরম্যান্স করে বাংলা দলে ঢুকে পড়তেন। এর ফলে বাংলা দলে ভিনরাজ্যের ক্রিকেটারদের ভিড় বেশি হয়ে যাচ্ছিল। তাই কর্তারা নতুন নিয়ম আনেন। নিয়মে বল হয়, ভিনরাজ্যের ক্রিকেটারদের অন্তত তিনবছর কলকাতার ক্লাব ক্রিকেট খেলতে হবে। এর সঙ্গে আরও অনেক নিয়ম টেনে আনা হয়। সেগুলি বৈভবের ক্ষেত্রেও বর্তাবে। তা হলে তাঁর এখানে এসে কি লাভ। এখন দেখার বিষয় নিয়মে অনেক ছাড় থাকে। বৈভবের ক্ষেত্রে ছাড় পাওয়া গেলে তখন কথা বলা যেতে পারে। পাশাপাশি বোর্ড কর্তাদের সঙ্গেও কথা বলতে হবে। এসব মিটে যাওয়ার পর বৈভবের পরিবারের সঙ্গে আলোচনায় বসতে পারে বাংলার ক্রিকেট কর্তারা। তার আগে বসে কি লাভ! তাই বৈভবের বাংলায় খেলতে আসা অনিশ্চিত বলতে হবে। এই সব নিয়মের জাঁতাকলে বৈভবকে পড়তে না হলে তাঁকে আগামি মরশুমে বাংলায় খেলতে দেখা যেতে পারে।